বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলন ও রাসুলুল্লাহর (সা:) আন্দোলনের ফলাফল
আন্দোলনে সচেতন হবার পর থেকে যেসব ঘটনা চোখে পড়েছে, তাতে আশাবাদী হবার যথেষ্ট কারন রয়েছে ! একটা সময় নিজের কাছেই অস্পষ্ট ছিলো অনেক কিছু । ধীরে ধীরে সব অস্পষ্টতা চোখের সামনে থেকে একে একে সরে গেছে । প্রথমত: এই আন্দোলন যে আসলেই রাসুল সা: এর শেখানো ও দেখানো কল্যানরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সত্যিকারের ইসলামী আন্দোলন, সেটা দিবালোকের মত পরিষ্কার হয়ে গেছে । আন্দোলন প্রতিষ্ঠাতার জীবনাচারন ও জীবনের নানা ঘটনাবলী, আন্দোলনের ওপর নানা সময়ে আরোপিত ঝড়-ঝঞ্ঝা ও বিপদাপদ এবং সেসকল থেকে উত্তরন - শাহাদাৎ- অলৌকিকতা ... সবকিছু একবিন্দুতে মিলালে এই সিদ্ধান্ত নেয়াটা কঠিন কিছু না ।
সংক্ষেপে কিছু উপলদ্ব্ধি মিলালে যেমনটা দাঁড়ায় ...
১. মদীনা সনদ
২. বদর যুদ্ধ
৩. ওহুদ যুদ্ধ
৪. খন্দক যুদ্ধ
৫. হুদায়বিয়ার সন্ধি
৬. মক্কা বিজয়
এই বিশ্লেষণ বা উপলদ্ধি একান্তই নিজস্ব কিছু শান্তনা খুঁজে নেয়া বা মনকে আশাবাদী করার চেষ্টা । এটার কোন শক্ত ভিত্তি নেই, যা অন্যকে মেনে নিতে হবে ... লেটস স্ট্যার্ষ্ট ... ... ... !!
১. বিএনপির সাথে জোট : ২০০১ এ নির্বাচনের পূর্বে জোটব্দ্ধ আন্দোলন শুরু হয় । এই জোট হবার পর থেকে বহু প্রশ্ন হয়েছে । আমি নিজেও অনেককে এই প্রশ্ন করতে বাধ্য হয়েছি ! ইসলামী আন্দোলন কিভাবে ক্ষমতার লোভে অথবা অন্য কোন কারনে বিএনপির সাথে জোট করতে পারে ? এর উত্তরে যেসব কথা এসেছে, তা হলো রাসুল সা: এর মদীনা সনদ । মদীনা সনদের পরে রাসুল সা: ই মদীনার প্রধান ছিলেন । ওই সনদ ছিলো মদীনাবাসী ইয়াহুদী-খৃষ্টান-মুশরিক ও মুসলমানদের মধ্যে চুক্তি ... এই চুক্তির উদাহরন দিয়ে বিএনপির সাথে জোটকে জাষ্টিফাই করা হয়েছে । সময়ের প্রয়োজনে এমন জোট ইসলাম অনুমোদিত এবং এরকম জোট অযৌক্তিক ও না ....
২. ২০০১ সালের নির্বাচন : বদর যুদ্ধের বিরাট বিজয়ের সাথে মিলাই আমি ২০০১ এর নির্বাচনের বিজয়কে । এই ব্যাপারটা তখন মাথায় আসেনি । মাথায় এসেছে পরবর্তীতে .... বিশেষ করে ২০০৮ সালের নির্বাচনে চরম পরাজয়ের পর ।
৩. ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচন : ২৮ অক্টোবরের মত এতবড় কুরবানী দেবার পরেও ২০০৮ এর নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের বিরাট পরাজয়ে, আল্লাহ যে কল্যান রেখেছেন , সেটা হামজা রা: সহ ৭০ সাহাবী শহীদ হওয়া ওহুদ যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের মধ্যে খুঁজে নিতে হবে । ওহুদ যুদ্ধের পর মুসলমানেরা যেভাবে অনেক ভুল ত্রুটি শুধরে নিতে পেরেছেন , এবার সে কাজটি করার সময় এসেছে । ..... এবং এই ঘটনাকে ওহুদ যুদ্ধের সাথে মিলাতে গিয়েই ২০০১ এর নির্বাচনকে বদরের মহান বিজয়ের সাথে মিলাতে সুবিধা হয়েছে ।
৪. পরবর্তী নির্বাচন (২০১৫): বিএনপির সাথে বিচ্ছেদ ঘটনোর সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চলানো হবে আগামী দিনগুলিতে । সব ধরনের প্রচেষ্টা ক্ষমতাসীন দল ও বিদেশী শক্তিগুলো করবে । সম্ভবত বিএনপি নিজেও ভেঙে যাবে অনেকভাগে । এসব ভাঙা বিএনপির হয়তো কোন একটা গ্রুপের সাথে জোট থাকবে । অর্থাৎ, শেষ পর্যন্ত খন্দকের যুদ্ধের মত করে ভেতর-বাহির-উপর-নীচ সবদিক থেকে ইসলামী আন্দোলনের ওপর প্রচন্ড চাপ আসবে । আল্লাহর প্রত্যক্ষ সাহায্যে অবশেষে এই অবরুদ্ধ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থাকে কোন এক “ভার্চুয়াল” খন্দক ও দেয়ালের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেয়া হবে ...
৫. এর পরের নির্বাচন (২০২১) : আল্লাহর ওপর অসীম ভরসা করে সেই শুভক্ষনের অপেক্ষায় আছি, যেখানে আওয়ামীলীগের সাথে ইসলামী আন্দোলনের এক তাৎপর্যপূর্ণ ও সুকৌশলী চুক্তি হবে । এই চুক্তির সাথে মিল হবে হুদায়বিয়ার সন্ধির সাথে । এই চুক্তির সামান্য কিছু পরেই বিশ্বব্যবস্থার নাটকীয় পরিবর্তন ঘটতে থাকবে । এদেশেও ইসলাম বিরোধী শক্তি অসহায় হয়ে দেখতে থাকবে ইসলামের প্রভূত প্রসার ও প্রতিষ্ঠা । এঈসময়ে ছোট ছোট ইসলামী দলগুলো সম্ভবত বৃহত্তর আন্দোলনের সাথে একীভূত হয়ে যাবে ।
৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : আমার যতদূর ধারনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রের কেন্দ্রবিন্দু । জাতীয় সংসদ নয়, এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় । অনেকটা ছেলেমানুষী চিন্তা হতে পারে, বা ভাবতে পারেন , কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস.এম হলের সামনের ভাষ্কর্যগুলো আমি যখন-ই দেখি ৩৬০ শব্দটা আমার মনে পড়ে যায় ! মনে পড়ে যায় কাবা অভ্যন্তরের ৩৬০ মুর্তির কথা । ইনশাআল্লাহ , হুদায়বিয়ার চুক্তির কিছু পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অটোমেটিক ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন করে দেবেন ... এই জনপদে ইসলামী আন্দোলনের বিজয়ের চুড়ান্ত পর্যায়টি হবে তখন .. রক্তপাতহীন-স্বাভাবিক একটি চুড়ান্ত বিজয় ... কোরআনিক বিজয় ... রাসুলুল্লাহ সা: এর জীবনানুসারে বিজয় ... গনতান্ত্রিক বিজয় ... !!!
লেখাটি বার পড়া হয়েছে..